কবি বুলবুল সরওয়ারের জন্ম ১৯৬২ সালের ২৭ নভেম্বর গোপালগঞ্জে। ৯ ভাইবোনের মধ্যে কনিষ্ঠ। মিশনারি স্কুল দিয়ে শুরু হয় তার শিক্ষা জীবন। ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা তার মজ্জাগত এবং চিন্তায়ধারায় অসাম্প্রদায়িকতা। এ কবি সারাজীন লড়াই করেছেন সুন্দরের সাধনায়। ঢাকা মেডিকেলের স্নাতক অধ্যাপক ডা. বুলবুল সরওয়ার সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন দেড়-যুগ ধরে। হেল্থ এডুকেশন মাস্টার্স করে কায়রো থেকে উচ্ছশিক্ষা নিয়েছেন জনমিতিতে। পিএইচডি গবেষণা করছেন HIV/AIDS নিয়েই।
এই কবির অনুবাদগ্রন্থ সংখ্যা ১৬। তিনি অনুবাদ শুরু করেন লিও টলস্টয়, ভিক্টর হুগো, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে এবং আর্থার কোনান ডয়েল-এর কৈশোরিক গদ্য রূপান্তর দিয়ে। কুরবান সাঈদের কালজয়ী গ্রন্থ ‘আলী অ্যান্ড নিনো’ অনুবাদের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ভাষান্তরে প্রবেশ বুলবুল সরওয়ারের। তার প্রায় সব অনুবাদই স্বীকৃতি পেয়েছে মৌলিক সৃষ্টির মর্যাদায়।
এগারোটি নোবেলজয়ী বইয়ের অনুবাদ তিনি করেছেন। এছাড়াও সিরাতের উপর লিখেছেন ‘নবীজীবনের শতকথা’ নামে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একশোটি বিষয়। এছাড়াও ১১টি কাব্যগ্রন্থ ও গল্প উপন্যাস মিলিয়ে তার প্রকাশিত মোট বইয়ের সংখ্যা পঞ্চান্নটির মতো।
পরিবারেও ছিল শিল্প-সাহিত্যের আবহ। বিশেষত বাবার প্রভাব এবং বড় তিন ভাইয়ের উৎসাহ তাকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে সাহিত্যেই ধ্যান-জ্ঞান করে নিয়েছেন। লেখালেখি শুরু শৈশবে। আজাদ-ইত্তেফাক থেকে শুরু করে দেশের অধিকাংশ দৈনিক ও সাময়িকীতে লিখেছেন। কলকাতা-আসামেও সমান জনপ্রিয়। ১৯৮৯তেই ভারত থেকে প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘হিটলারের লাশ’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক বুলবুলের প্রিয় বিষয় চিঠি, আড্ডা, কফি এবং নজরুল। স্ত্রী দিলরুবা মনোয়ার, কন্যা আয়েশা তাজিন মাশরুবা ও পুত্র আয়হান নাভিদ নওরোজ।
বুলবুল সরওয়ার রচিত গ্রন্থসমূহ :
কবিতা: প্রণয় পঙ্ক্তি, রুবাইয়াত-ই-বুলবুল, Soft Touch of Salainity, রুবাইয়াত, প্রণয়ের প্রিয় প্রচ্ছদ, রুবাইয়াত, মির্জা গালিবের গজল, যে হারায় পূর্ণিমায়, কবিতার মুসাফির। ভ্রমণ কাহিনী : ঝিলাম নদীর দেশ, মহাভারতের পথে এক, মহাভারতের পথে-দুই, মমির মিশর, ইস্তাম্বুল, নীল যমুনার জল, মমির দেশ মিশর। গল্প : শ্রেষ্ঠ গল্প, অধরার সাতরঙ। উপন্যাস : সুন্দরী ও চাঁদ, মারিয়ার ব্লাউজ, মহানগরী। চিকিৎসা : এইচ. আই. ভি. এইডস। প্রবন্ধ : বোধে ও বেদনায় মীর তকী মীর, হৃদয়ে আমার মির্জা গালিব, শিল্প ও কবিতা। চিঠি : পত্র নয় প্রেম। শিশু-সাহিত্যি : রাজকন্যা কংকাবতী, ব্যাঙ আর কুমীর, দাঁত ভাংগা হাঙর, মন খারাপ খরগোশ, বীর বলে ডাকব যাদের, কঙ্কাবতী রাজকন্যা। অনুবাদ : ভিক্টোরিয়া, আলী ও নিনো, ড্রাগন সিড, বারাব্বাস, এ পোর্ট্রেট অব দ্য আর্টিস্ট অ্যাজ এ ইয়াং ম্যান, স্বপ্নমহল, গমের দানা, গ্যালি গাই, দ্য ওয়ান্ডারফুল অ্যাডভেঞ্চারস অভ নিলস, এ গ্রেন অভ হুইট, সিদ্ধার্থ, ইসসা ভ্যালি, স্পার্ক অফ লাইফ, স্টেলা ও মুন অভ ইজরাইল।
তিনি যেসকল পুরস্কার পান :
পদ্মরাগ সাহিত্য সংঘ সম্মানা-২০১৫, সৈয়দ আলী আহসান সম্মাননা-২০১৬, আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭।
Recent Comments