প্রার্থনা
সুন্দর ঝিকিমিকি সোনার সকাল
চাইলেই তুমি পারো মেঘ দিতে ঢাল।
রব তুমি পারো দিতে, গাছ ভরা ফুল
জেগে ওঠা চর আর ভাঙ্গা দুই কূল।
তোমার ইশারায় আসে বান-খরা,
তোমার রহম পেয়ে এ শীতল ধরা।
তোমার পাঠানো সেনা করোনার ভয়,
আজ সব নত যেন, আজ ভীতিময়।
আমরাই গোনাহগার ভুলে মশগুল,
তুমি ছাড়া দিশা নেই, নেই কোন কূল।
তুলে নাও মুছে দাও ‘করোনা’কে আজ,
দাও খোদা ধরণীতে ভীতিহীন সাজ।
……………………………………………
করোনা
করো না কেউ ভুল,
ভুল করলে এই করোনায়
ছাড়বে না এক চুল!
করতে হবে কি?
সঠিক ভাবে হাতটা ধোয়া
আর যাবে না যখন তখন
সবার সাথে ধরা-ছোঁয়া।
সব খানে নয় কাশি-হাঁচি
নিয়ম মেনে পরলে মুখোশ
একই সাথে সবাই বাচি।
একটু বেশি পানি পানে,
থাকলে সাথে মৌসুমী ফল
এটাই অনেক সুফল আনে।
শেষ কথাটা কি?
নয়রে ভীতু মন,
একটা ঔষুধ খুবই কাজের
সেটাই সচেতন।
……………………………………………
থমকে আছে
থমকে আছে গাড়ির কাপন
থমকে আছে নাও,
থমকে আছে শহর জীবন
থমকে আছে গাঁও।
থমকে আছে ছোটা-ছুটি
থমকে দোকান-পাট,
থমকে আছে অফিস- বাড়ি
থমকে নদীর ঘাট।
থমকে আছে মাঠের সেনা
থমকে শিশুর বই,
থমকে আছে খেলাধুলা
থমকে হাসির খই।
থমকে আছে মঞ্চে ভাষণ
থমকে কথার জোর,
থমকে আছে পার্কে ঘোরা
থমকে হাটা ভোর।
থমকে আছে ধরা তবু
কাঁদছে শিশু ঠিক,
মায়ের ভালবাসা পেয়ে
হাসছে উঠে ফিক্।
……………………………………………
স্বাধীনতা
স্বাধীনতা ফোটা ফুল
চামেলীর হাসি,
স্বাধীনতা জাদু সুর
তপনের বাঁশি।
স্বাধীনতা পায়রার
সাদা দুই ডানা,
স্বাধীনতা নায়ে পাল
নেই ছুটে মানা।
স্বাধীনতা বাজা বেল
ইশকুলে ছুটি,
স্বাধীনতা বোশেখের
আম খোটাখুটি।
স্বাধীনতা ভাসা ভেলা
নিয়ে চলা দুর,
স্বাধীনতা মা’র মুখে
হাসি ভরপুর।
……………………………………………
ফাতেমার ঈদ
নাড়ে আর ভাজ করে
হাসি এক গাল,
ফাতেমার দু’টি জামা
সাদা আর লাল।
মামা দিলো আরো দুই
মোট হলো চার,
এক ঈদে এতো জামা
আছে তবে কার!
ঈদ ভোরে ফাতেমার
মুখ হলো কালা,
কি হলো; কে দিলো
সুখ মনে তালা!
বুয়ার ওই নাতনীটা
জামা ছেড়া-পটি,
দুই পায়ে নেই কেন?
পায়ে দেয়া চটি।
দিতে হবে তাকে জামা
ফাতেমার জিদ,
তবে নাকি ভালো তার
এবারের ঈদ।
……………………………………………
ভাষার কথা
একটা গাছে নানান পাখির
কাটতো ভালো খুব,
সময় পেলেই গল্প-গানে
সবাই দিত ডুব।
সব পাখিদের শিতল পরাণ
মাকে যখন ডাকে,
ছা পাখিতে পাঠশালাতে
মায়ের ভাষায় হাঁকে।
হটাৎ এসে বাজপাখি এক
ভাষায় দিল হানা,
তার ভাষাতে বলবে কথা
অন্য ভাষায় মানা!
প্রতিবাদের উঠলো জোয়ার
এমন কি আর হয়?
আঘাত এল; জীবন গেল
ভাষা ছাড়ার নয়।
রক্তে ভিজে জমিনটা লাল
ঝরলো তাজা প্রাণ,
ওই ভাষাটি সবার এখন
অ-আ’য় লেখা গান।
……………………………………………
সোনায় মোড়া দিন
সোনায় মোড়া দিনগুলি আজ আঁকি
কেমন ছিল দিন?
পশুর নদীর বাকে
বাবলা পাতার ডাকে,
ছুটে যেতাম উদোম গায়ে-পায়ে
আহ! খুবই রঙ্গিন।
সোনায় মোড়া দিনগুলি আজ ভাবি
কেমন ছিল তা?
দখিন বিলের জলে
দস্যি ছেলের দলে,
নাও ছোটানো শেষ হলে ঐ
সাদা দু’খান পা।
দখিন হাওয়ায় দুলতো খুবই রোজ
কলমি গাছের ফুল,
বেত বাধানো ঘুড়ি
হাওয়ায় ওড়াউড়ি
আমার তখন মনের আকাশ জুড়ে
সুখের হুলুস্থুল।
……………………………………………
আমাদের খোকা
টিভি দেখে ভাত খায়
আমাদের খোকা,
টিভি ছেড়ে ভাত দেই
খোকা কি বোকা!
টম-জেরি দিয়ে দিয়ে
সারাদিন রাখি,
সেলফোন দিলে চুপ
আমাদের পাখি।
আমরাও সারাদিন
কাজে করি পার,
ফেসবুকে বিজি থাকি
আছ টুইটার।
কিছুদিন পরে খোকা
কথা বলে কম,
কারো সাথে খেলা নেই
মোটে একদম।
আহ! আমরা কি বোকা
আমাদের খোকা?
‘বিশেষ’ এক শিশু আজ
খুব বোকাসোকা।
……………………………………………
ভেজাল
ভেজাল চালে ভেজাল ডালে
মশলা ভেজাল ভরা,
ভেজাল বাজার ভিড়ে যেন
আসল বাজার খরা।
দুধে ভেজাল গুড়ে ভেজাল
ভেজাল ভরা ঘি’য়ে,
সিরাপ-বড়ি তাতেও ভেজাল
ভেজাল খবর নিয়ে।
ফলে ভেজাল জলে ভেজাল
বাতাস ভেজাল মেলা,
ভেজাল ভোটে ভেজাল নোটে
ভেজাল মাঠে খেলা।
দিনে দিনে বাড়ছে ভেজাল
বাড়ছে ভেজাল মন,
ভেজাল ভিড়ে আসল আজও
খুঁজি সারাক্ষণ।
Recent Comments