পরের দিন হাইডি দাদিমাকে দেখতে গেলো। দাদাও তার সাথে এলেন। তার হাতে একটা বড় ঝুড়ি। তিনি হাইডির বাক্সটি বহন করতে পারেননি। তাই জিনিসগুলো ঝুড়িতে ভরে নিয়ে গেলেন।
দাদিমা হাইডির সাথে কথা বলে খুশি হলেন।
“তুমি কি রোলগুলো পছন্দ করেছিলে?” হাইডি জিজ্ঞেস করলো দাদিমাকে। “হ্যাঁ। এগুলো খুবই ভালো। এগুলো নরম আর খুব সহজে কামড় দেয়া যায়। এগুলো আমাদের রুটির মতন শক্ত নয়। এগুলো খাওয়ার পর আজ আমি বেশ ভালো বোধ করছি।”
“ইশ যদি আমাদের আরও কিছু টাকা থাকতো। এসব রুটি ডরফ্লিতেও পাওয়া যায়। তবে শক্ত কালো রুটির চেয়ে এগুলো অনেক দামি।” অপেক্ষা করলেন ব্রিজিট্টা।
“টাকা? আমি অনেক টাকা এনেছি। জনাব সিম্যান আমাকে দিয়েছেন। পিটার প্রতিদিন তোমাকে একটি করে রোল কিনে দেবে দাদিমা। আর রবিবারে দুটি।” বললো হাইডি।
“না, না। আমার টাকা লাগবে না।”
হঠাৎ হাইডি দাদিমার পুরনো গানের বইটি লক্ষ্য করলো। সে বললো, “দাদিমা, আমি এখন পড়তে পারি। আমি কি তোমাকে গান পড়ে শোনাবো?”
“সত্যিই তুমি পড়তে পারে? আচ্ছা ঠিক আছে শোনাও।”
হাইডি সূর্যকে নিয়ে লেখা একটা গান পড়ে শোনায়। গান শুনে দাদিমার চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেলো। হাইডি তাকে কখনোই এতো আনন্দিত হতে দেখেনি।
“হাইডি গানটি আমাকে আনন্দ দিয়েছে। মনে হচ্ছে ভেতরটা সূর্যের মতই আলোকিত হয়েছে। আবার পড়।” বললেন দাদিমা।
দাদা চলে এসেছেন। হাইডিকে তাই যেতে হলো। হাইডি তাকে তার পরিকল্পনাটা বললেন কীভাবে দাদিমাকে রোল দেয়া যায়।
“কিন্তু হাইডি, তুমিতো তোমার টাকা দিয়ে তোমার জন্য একটি ভালো মানের বিছানা কিনতে পারতে।” বললেন তিনি।
“আমি ভালো বিছানা চাই না। আমি দাদিমাকে রোল কিনে দিতে চাই। স্রষ্টা তাকে সাহায্য করার একটা উপায় আমাকে দেখিয়েছেন। এজন্য আমি খুব খুশি।”
দাদা অবাক হয়ে তার দিকে তাকালেন। “হাইডি, স্রষ্টা সম্পর্কে কে তোমাকে শিখিয়েছেন?”
“ক্লারার দাদিমা। তিনি আমাকে প্রতি রাতে প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন। দাদা, তুমি স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা কর?”
“কখনোই না। আমি স্রষ্টাকে নিয়ে ভাবি না। স্রষ্টাও আমাকে নিয়ে ভাবে না। আমি তার কাছে আর ফিরে যেতে পানি না।”
“তুমি অবশ্যই ফিরে যেতে পারো দাদা। তুমি যদি স্রষ্টার কাছে ফিরে যাও তবে তিনি তোমাকে ক্ষমা করবেন। দাদিমা আমাকে তাই বলেছেন।”
ঐদিন রাতে হাইডি ঘুমিয়ে গেলে দাদা বাইরে গেলেন। তিনি আকাশের দিকে তাকালেন। তিনি স্রষ্টার কাছে তাকে ক্ষমা করার জন্য প্রার্থনা করেন।
পরের দিনটি ছিল রবিবার। হাইডির ঘুম ভাঙলো। সে ডরফ্লির চার্চের ঘন্টাধ্বনি শুনতে পেলো।
“ভালো জামা পড়ে নাও। আমরা চার্চে যাচ্ছি।” বললেন দাদা।
হাইডি অবাক হয়ে দাদার দিকে তাকায়। তারপর পোষাক পরতে চলে যায়।
তারা পৌঁছে দেখলো চার্চ লোকজনে পরিপূর্ণ। তাই তারা পেছনের দিকে বসলো। শীঘ্রই আল্ম অপার চার্চে আসার খবরটি সবাই জেনে গেলা।
সবাই অবাক হয়ে বলাবলি করতে লাগলো, “সে শেষ পর্যন্ত নিজেকে পরিবর্তন করেছে। এই শিশুটিই তাকে বদলে দিয়েছে।”
Recent Comments